একজন পুলিশ কর্মকর্তার ভাবনা

আব্দুল আহাদ

আমি নই, সে এক অন্য মানুষ————————————————————–রাস্তাঘাটে প্রচুর যান,কিন্তু কোথাও কাউকে ওভারটেক করতে আজকাল দেখা যায়না। অপ্রয়োজনে কেউ হর্ন বাজাচ্ছে না।পিছনে এ্যাম্বুলেন্সের শব্দ শুনা মাত্র যানগুলো যে যার মতো সাইট হয়ে গেল। খুব সহজে পার হয়ে গেল ব্যস্ততম এলাকা।আবার একটু পিছন ফিরে তাকাতেই দেখা গেল অপর একটি এ্যাম্বুলেন্স নীরবে অন্যযানবাহনের সারিতে। অযথা সাইরেন বাজানোর কোন প্রবনতা তার মধ্যে নাই। রাতের আধারে গাড়ীর হেডলাইট গুলো কি সুন্দর বিপরীত দিক থেকে আসা গাড়ীর সীমানায় আসামাত্র উভয়েই ডিমার দিয়ে দুটি গাড়ীর নিরাপদ অতিক্রম,ঠিক যেন দুটি যন্ত্র দানবের মধ্যে চমৎকার সমঝোতা।গাড়ীর জরুরী বাতি জ্বালানো মাত্র সামনের যানটি তাকে অতিক্রমের পথ সুগম করে দিল অতি সহজে। আবার অতিক্রম করে যাওয়া চালক হাত নেড়ে ভদ্রতা জানাতে ভুলল না।রাস্তার প্রতিবাদী মানুষগুলো রাস্তার দুপাশে দাড়িয়ে তাদের নীরব প্রতিবাদ দেখে রাস্তার চলাচল গামী লোকজন তাদের সাথে সহমর্মিতা প্রকাশ করে গেল।স্কুল কলেজগামী ছাত্র ছাত্রী রাস্তা পারাপারে প্রতিটি যানবাহন কে যেন রিমোট কন্ট্রোলেরর মতো থামিয়ে দিল।ফুটপাত গুলো দিয়ে সকল বয়সী লোকজন তাদের আপন মনে হেটে যাচ্ছে। সব্জিওয়ালারা তাদের এলাকার খোলা মাঠে নির্বিঘ্নে সরকারের নির্ধারিত দামে রাসায়নিক মুক্ত ফলমূল বিক্রি করছে।বিত্তশালী মানুষগুলোও কেউ পায়ে হেটে, কেউ বাইসাইকেল চালিয়ে নিজেকে কর্মক্ষম করে তুলছে।আজকাল ট্রাফিক পুলিশকে খুব কম চোখে পড়ে।বিয়েতে আর শতাধিক গাড়ীর বহর চোখে পড়ে না।পরিবারে প্রয়োজনের অতিরিক্ত কোনযানবাহন নেই। খুব জরুরী এবং দূরের পথ ব্যতীত কেউ চার চাকার গাড়ী বাহিরে বের করে না।নামি দামি গাড়ী ব্যবহারের অসুস্থ প্রতিযোগিতা আর নাই।ভোগ বিলাশী মনোভাব বিত্তবানদের মধ্যে দেখা যায় না।কিন্তু সেই মানুষগুলোর মধ্যে আমি না থাকলেও তারা অন্য মানুষ। অন্য কোন দেশের নয় তারা অামাদের দেশের সোনালী স্বপ্নিল আগামীর বাংলাদেশের। লিখাটি প্রচন্ড দাবদাহের মধ্যে পতিত এক বিশাল ট্রাফিক জ্যামে আটকে পড়া আমার হতাশা মিশ্রিত কোয়ান্টাম ভাবনা থেকে আশাবাদী একজন সাধারন নাগরিকের স্বপ্নিল আশা।লিখাটি উৎসর্গ ঃ ডাঃ মোবাশ্বের ভাইয়ের জন্য।যিনি আজই আমাকে স্মার্ট ফোনে যুক্ত বর্ণ লিখা না শিখালে আমার মনের এই অভিব্যাক্তি মনেই থাকতো।

আপনার মতামত দিন
শেয়ার করুন